ঢাকা ০২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল জাজিরার ৫ সাংবাদিক হত্যা করল ইসরায়েল

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ০১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • / 79

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত গাজা শহরের আল শিফা হাসপাতালের কাছে একটি তাঁবু লক্ষ্য করে দখলদার ইসরায়েলিরা বোমা হামলা চালালে ৫ সাংবাদিক নিহত হন। এর মধ্যে আল জাজিরা আরবির প্রতিবেদক আনাস আল শরীফও রয়েছেন।

রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থিত তাঁবু লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে আল জাজিরার পাঁচ সংবাদিকসহ মোট সাতজন নিহত হন।

নিহত সাংবাদিকরা হলেন—আনাস আল শরীফ (২৮), সংবাদদাতা মোহাম্মদ ক্রিকেহ, ক্যামেরা অপারেটর ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নওফাল ও মোমেন আলিওয়া।

নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক এক্স বার্তায় আল জাজিরার খ্যাতিমান সাংবাদিক আনাস আল শরীফ লেখেন, গাজা নগরীর পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ শুরু করেছে ইসরাইল। অবিরাম বোমাবর্ষণ, গত দুই ঘণ্টা ধরে। গাজা সিটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন তীব্রতর হয়েছে।’

ওই পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেন আনাস। তার সবশেষ ভিডিওতে ইসরাইলের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে অন্ধকার আকাশ মুহূর্তের জন্য কমলা আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে।

আনাস আল শরীফকে হত্যার পর এক বিবৃতি প্রকাশ করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। তাতে তার বিরুদ্ধে হামাসের একটি শাখার নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ করে।

ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা বলেন, আনাস আল শরীফের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ‘কোনো ধরনের প্রমাণ নেই’। তার ভাষায়, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে থাকাই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন কাজ।’

গত জুলাই মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদরাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও শেয়ার করেন। যেখানে আনাস আল শরীফকে হামাসের সামরিক শাখার সদস্য বলে অভিযোগ করা হয়। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর এই দাবি মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন যেন কিছুতেই থামছে না। এ পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। গাজার স্বাস্থ্য

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ হাজার ৩৩০ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন ফিলিস্তিনি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে যেসব নিহত ও আহতকে আনা সম্ভব হয়েছে, কেবল তাদেরকেই ধরা হয়েছে হিসেবের মধ্যে। ধ্বংসস্তূপের তলায় এবং সড়কে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে, যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ এ জন্য দায়ী। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আহত ও নিহতের মোট সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

six + 20 =

ট্যাগস :

আল জাজিরার ৫ সাংবাদিক হত্যা করল ইসরায়েল

আপডেট সময় : ০১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত গাজা শহরের আল শিফা হাসপাতালের কাছে একটি তাঁবু লক্ষ্য করে দখলদার ইসরায়েলিরা বোমা হামলা চালালে ৫ সাংবাদিক নিহত হন। এর মধ্যে আল জাজিরা আরবির প্রতিবেদক আনাস আল শরীফও রয়েছেন।

রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থিত তাঁবু লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে আল জাজিরার পাঁচ সংবাদিকসহ মোট সাতজন নিহত হন।

নিহত সাংবাদিকরা হলেন—আনাস আল শরীফ (২৮), সংবাদদাতা মোহাম্মদ ক্রিকেহ, ক্যামেরা অপারেটর ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নওফাল ও মোমেন আলিওয়া।

নিহত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এক এক্স বার্তায় আল জাজিরার খ্যাতিমান সাংবাদিক আনাস আল শরীফ লেখেন, গাজা নগরীর পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ শুরু করেছে ইসরাইল। অবিরাম বোমাবর্ষণ, গত দুই ঘণ্টা ধরে। গাজা সিটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসন তীব্রতর হয়েছে।’

ওই পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেন আনাস। তার সবশেষ ভিডিওতে ইসরাইলের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে অন্ধকার আকাশ মুহূর্তের জন্য কমলা আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে।

আনাস আল শরীফকে হত্যার পর এক বিবৃতি প্রকাশ করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। তাতে তার বিরুদ্ধে হামাসের একটি শাখার নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ করে।

ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটরের বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা বলেন, আনাস আল শরীফের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ‘কোনো ধরনের প্রমাণ নেই’। তার ভাষায়, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে থাকাই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন কাজ।’

গত জুলাই মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদরাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও শেয়ার করেন। যেখানে আনাস আল শরীফকে হামাসের সামরিক শাখার সদস্য বলে অভিযোগ করা হয়। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর এই দাবি মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন যেন কিছুতেই থামছে না। এ পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। গাজার স্বাস্থ্য

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ হাজার ৩৩০ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন ফিলিস্তিনি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে যেসব নিহত ও আহতকে আনা সম্ভব হয়েছে, কেবল তাদেরকেই ধরা হয়েছে হিসেবের মধ্যে। ধ্বংসস্তূপের তলায় এবং সড়কে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে, যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ এ জন্য দায়ী। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আহত ও নিহতের মোট সংখ্যা আরও অনেক বেশি।