ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একই পরিবারের ৬ জনসহ নিহত ২৪

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ১২:২৯:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / 13
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৬ সদস্যসহ আরও ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫০ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলায় একই পরিবারের ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া  উত্তর-পশ্চিম গাজা শহরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পশ্চিম গাজা শহরের আরেকটি হামলায় সাবেক একজন ফুটবল খেলোয়াড়ও নিহত হয়েছেন।

এর বাইরে, দক্ষিণ-পশ্চিম গাজা শহরের তাল আল-হাওয়া এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে থাকা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলায় আরও দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।

এ ছাড়া দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে আরও একজন ইসরায়েলি হামলায় নিহত এবং একই শহরে আগের ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

পাশাপাশি খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবু লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন শিশুসহ ৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।

একইসঙ্গে দক্ষিণ গাজার ইউনিভার্সিটি কলেজের কাছে বাড়িগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদিকে গাজা শহরের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকেও ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়েছে। তবে আহতদের সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসনের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে গেল মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

four × four =

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একই পরিবারের ৬ জনসহ নিহত ২৪

আপডেট সময় : ১২:২৯:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৬ সদস্যসহ আরও ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫০ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলায় একই পরিবারের ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া  উত্তর-পশ্চিম গাজা শহরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পশ্চিম গাজা শহরের আরেকটি হামলায় সাবেক একজন ফুটবল খেলোয়াড়ও নিহত হয়েছেন।

এর বাইরে, দক্ষিণ-পশ্চিম গাজা শহরের তাল আল-হাওয়া এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে থাকা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলায় আরও দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।

এ ছাড়া দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে আরও একজন ইসরায়েলি হামলায় নিহত এবং একই শহরে আগের ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

পাশাপাশি খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবু লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন শিশুসহ ৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।

একইসঙ্গে দক্ষিণ গাজার ইউনিভার্সিটি কলেজের কাছে বাড়িগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদিকে গাজা শহরের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকেও ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়েছে। তবে আহতদের সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসনের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে গেল মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।