ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে সাবেক সংসদ সদস্য একরামুলসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 194
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ২০১৩ সালে শ্রমিক দলের কর্মী মো. খোকনকে (২৫) গুলি করে হত্যার অভিযোগে আজ রোববার বিকেলে মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী নিহত খোকনের বাবা মফিজুল হক। আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।

মামলার আসামিদের মধ্যে নোয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক, জেলা পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন, নোয়াখালী পৌরসভার কাউন্সিলর নাসিম উদ্দিন ও ফখরুল ইসলামের নাম রয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা দলীয় কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে দত্তেরহাট বাজার এলাকার দত্তবাড়ির মোড়ে জড়ো হন। এ সময় তাঁর ছেলে খোকন বাড়ি থেকে দত্তেরহাটের শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পরে তখনকার সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীসহ দলীয় নেতাদের নির্দেশে এজাহারে উল্লিখিত আসামিসহ আরও ২০০ থেকে ৩০০ ব্যক্তি বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে হামলা করেন। এ সময় তাঁর ছেলে খোকনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এ সময় বিভিন্ন দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

বাদী মফিজুল হকের অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁর গুলিবিদ্ধ ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে গুম করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আসামিদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন তাঁর ছেলেকে মৃত ভেবে পাশের একটি খালে ফেলে দেন। তিনি বাজারে গোলাগুলির খবর শুনে এগিয়ে গিয়ে খাল থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেলেকে উদ্ধার করেন। ছেলের কাছ থেকে হামলার বিষয়ে তিনি জেনেছেন। পরে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় খোকনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মফিজুল হক বলেন, তিনি ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আসামিদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাঁর মামলা নেয়নি। পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করা হলেও আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এতে তিনি ছেলে হত্যার বিচার পাননি।

মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খানসহ একাধিক নেতাকে কল করা হলে তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক  বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

nineteen − twelve =

নোয়াখালীতে সাবেক সংসদ সদস্য একরামুলসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আপডেট সময় : ১১:৪১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ২০১৩ সালে শ্রমিক দলের কর্মী মো. খোকনকে (২৫) গুলি করে হত্যার অভিযোগে আজ রোববার বিকেলে মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী নিহত খোকনের বাবা মফিজুল হক। আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।

মামলার আসামিদের মধ্যে নোয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক, জেলা পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন, নোয়াখালী পৌরসভার কাউন্সিলর নাসিম উদ্দিন ও ফখরুল ইসলামের নাম রয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা দলীয় কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে দত্তেরহাট বাজার এলাকার দত্তবাড়ির মোড়ে জড়ো হন। এ সময় তাঁর ছেলে খোকন বাড়ি থেকে দত্তেরহাটের শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পরে তখনকার সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীসহ দলীয় নেতাদের নির্দেশে এজাহারে উল্লিখিত আসামিসহ আরও ২০০ থেকে ৩০০ ব্যক্তি বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে হামলা করেন। এ সময় তাঁর ছেলে খোকনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এ সময় বিভিন্ন দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

বাদী মফিজুল হকের অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁর গুলিবিদ্ধ ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে গুম করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আসামিদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন তাঁর ছেলেকে মৃত ভেবে পাশের একটি খালে ফেলে দেন। তিনি বাজারে গোলাগুলির খবর শুনে এগিয়ে গিয়ে খাল থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় ছেলেকে উদ্ধার করেন। ছেলের কাছ থেকে হামলার বিষয়ে তিনি জেনেছেন। পরে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় খোকনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মফিজুল হক বলেন, তিনি ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আসামিদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাঁর মামলা নেয়নি। পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করা হলেও আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এতে তিনি ছেলে হত্যার বিচার পাননি।

মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খানসহ একাধিক নেতাকে কল করা হলে তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক  বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।