ঢাকা ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর বাংলাদেশি পণ্যবাহী ৪ ট্রাক ফেরত পাঠাল ভারত

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৪:২৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • / 6
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে ভারতীয় স্থল বন্দর ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানির পথ বন্ধ ঘোষণার পর তৈরি পোশাক বহনকারী চারটি ট্রাক ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি দেশটির পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ট্রাকগুলো ফেরত পাঠায় ভারত। পরে পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ঢাকায় চলে আসে।

এর আগে, মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট-সংক্রান্ত আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে স্থলপথে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানির সুযোগ বাতিল হয়ে যায় বাংলাদেশের।

পরবর্তীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে যে, ভারতের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার না করলে স্থলপথে নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
তারপরও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কারণে গতকাল পেট্রাপোল থেকে রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের পণ্যবাহী চারটি ট্রাককে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।

ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের স্থানীয় ব্যবস্থাপক বসির আহমেদ বলেন, ফিরে আসা ট্রাকগুলোতে তৈরি পোশাক ছিল। এসব পণ্য ভুটানে পাঠানো হচ্ছিল।

তিনি জানান, এসব ট্রাকের পণ্য কলকাতায় খালাসের কথা ছিল। সেখান থেকে ভারতীয় ট্রাকে সড়কপথে ভুটানে যেত। এতে সময় ও খরচ কমে।

গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতে বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ২০২০ সালে বর্ধিত করা হয়। এর ফলে গত পাঁচ বছরে ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য জট দেখা দেয়।

এতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের পণ্য আটকে থাকছে, বিলম্ব হচ্ছে এবং সরবরাহ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো সমস্যাবোধ করছি না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
জয়সওয়াল বলেন, এ কারণেই ভারতের মধ্য দিয়ে বিমানবন্দর ও বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এতে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেন জানান তিনি।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, স্থলবন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমসে। এ চিঠির আলোকে ট্রানজিট সুবিধার পণ্য বেনাপোল বন্দর থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। সে কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশের জন্য গেলে তা ফেরত পাঠায়। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঢাকার রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠানের ছিল।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস থার্ড কান্ট্রির কোনও পণ্যে কার্পাস ইস্যু করেনি। ফলে গতকাল তৃতীয় কোনও দেশে রপ্তানির জন্য আনা চার ট্রাক পণ্য তারা রিসিভ করেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

2 × five =

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর বাংলাদেশি পণ্যবাহী ৪ ট্রাক ফেরত পাঠাল ভারত

আপডেট সময় : ০৪:২৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে ভারতীয় স্থল বন্দর ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানির পথ বন্ধ ঘোষণার পর তৈরি পোশাক বহনকারী চারটি ট্রাক ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি দেশটির পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ট্রাকগুলো ফেরত পাঠায় ভারত। পরে পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো ঢাকায় চলে আসে।

এর আগে, মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট-সংক্রান্ত আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে স্থলপথে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানির সুযোগ বাতিল হয়ে যায় বাংলাদেশের।

পরবর্তীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে যে, ভারতের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার না করলে স্থলপথে নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
তারপরও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কারণে গতকাল পেট্রাপোল থেকে রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের পণ্যবাহী চারটি ট্রাককে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।

ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের স্থানীয় ব্যবস্থাপক বসির আহমেদ বলেন, ফিরে আসা ট্রাকগুলোতে তৈরি পোশাক ছিল। এসব পণ্য ভুটানে পাঠানো হচ্ছিল।

তিনি জানান, এসব ট্রাকের পণ্য কলকাতায় খালাসের কথা ছিল। সেখান থেকে ভারতীয় ট্রাকে সড়কপথে ভুটানে যেত। এতে সময় ও খরচ কমে।

গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতে বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ২০২০ সালে বর্ধিত করা হয়। এর ফলে গত পাঁচ বছরে ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে উল্লেখযোগ্য জট দেখা দেয়।

এতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের পণ্য আটকে থাকছে, বিলম্ব হচ্ছে এবং সরবরাহ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো সমস্যাবোধ করছি না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
জয়সওয়াল বলেন, এ কারণেই ভারতের মধ্য দিয়ে বিমানবন্দর ও বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এতে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেন জানান তিনি।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, স্থলবন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি ইস্যু করেছে কাস্টমসে। এ চিঠির আলোকে ট্রানজিট সুবিধার পণ্য বেনাপোল বন্দর থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। সে কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চারটি রপ্তানি পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশের জন্য গেলে তা ফেরত পাঠায়। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঢাকার রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার অ্যান্ড সি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠানের ছিল।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস থার্ড কান্ট্রির কোনও পণ্যে কার্পাস ইস্যু করেনি। ফলে গতকাল তৃতীয় কোনও দেশে রপ্তানির জন্য আনা চার ট্রাক পণ্য তারা রিসিভ করেনি।