ঢাকা ০১:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেনীর সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত, তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ১১:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • / 80

ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর অন্তত ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেনী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবেশ করায় নদীতীরবর্তী সায়েদপুর, চর ইঞ্জিমান, মাদরাসা পাড়া, আমতলী, ইতালি মার্কেট, রহমতপুর, তেল্লার ঘাট, কাজীর হাটসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সায়েদপুরের আব্দুর রহিম নামে এক বাসিন্দা বলেন, শনিবারের জোয়ার ছিল অস্বাভাবিক। এমন উচ্চতার পানি আগে কখনো দেখিনি। আমরা এ অবস্থার দ্রুত সমাধান চাই। একটি টেকসই রেগুলেটর নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে এ জনপদে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।

কাজীর হাটের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুছাপুর রেগুলেটর না থাকায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের সবকিছুই বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এক বাসিন্দা বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছি। প্রায় সময়ই জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। অথচ আমরা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এ দিকে জোয়ারের নোনাপানিতে হুমকিতে পড়েছে এসব এলাকার কৃষিজমি ও মৎস্য ঘের। বাসিন্দারা বলছেন, এসব এলাকার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রোববারও জেলাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, জোয়ারের পানি নদী হয়ে খালে প্রবেশ করে চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, বগাদানা ও চর মজলিশপুর এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি এসব এলাকায় চাষাবাদ না করে উঁচু জমিতে ফসল আবাদ করতে। জেলা কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. আবু মুসা রকি বলেন, আমরা স্লুইস গেটসহ প্লাবিত অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। সেখানে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১৪৬ মিটার। অমাবস্যায় এমনিতেই পানি বাড়ে, তার মধ্যে রেগুলেটর না থাকায় সাগরের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

seventeen + one =

ট্যাগস :

ফেনীর সোনাগাজীর ১১ গ্রাম প্লাবিত, তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি

আপডেট সময় : ১১:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর অন্তত ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফেনী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবেশ করায় নদীতীরবর্তী সায়েদপুর, চর ইঞ্জিমান, মাদরাসা পাড়া, আমতলী, ইতালি মার্কেট, রহমতপুর, তেল্লার ঘাট, কাজীর হাটসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সায়েদপুরের আব্দুর রহিম নামে এক বাসিন্দা বলেন, শনিবারের জোয়ার ছিল অস্বাভাবিক। এমন উচ্চতার পানি আগে কখনো দেখিনি। আমরা এ অবস্থার দ্রুত সমাধান চাই। একটি টেকসই রেগুলেটর নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে এ জনপদে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।

কাজীর হাটের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুছাপুর রেগুলেটর না থাকায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের সবকিছুই বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এক বাসিন্দা বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছি। প্রায় সময়ই জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। অথচ আমরা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এ দিকে জোয়ারের নোনাপানিতে হুমকিতে পড়েছে এসব এলাকার কৃষিজমি ও মৎস্য ঘের। বাসিন্দারা বলছেন, এসব এলাকার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রোববারও জেলাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, জোয়ারের পানি নদী হয়ে খালে প্রবেশ করে চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, বগাদানা ও চর মজলিশপুর এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি এসব এলাকায় চাষাবাদ না করে উঁচু জমিতে ফসল আবাদ করতে। জেলা কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. আবু মুসা রকি বলেন, আমরা স্লুইস গেটসহ প্লাবিত অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। সেখানে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১৪৬ মিটার। অমাবস্যায় এমনিতেই পানি বাড়ে, তার মধ্যে রেগুলেটর না থাকায় সাগরের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।