ঢাকা ০১:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের হামলায় নিহতের নতুন সংখ্যা জানাল ইরান

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ০১:০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • / 8

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১৩ দিনের সংঘাতে নিহতের সংখ্যা সংশোধন করেছে ইরান। নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সংঘাতে ইরানে ৩৮ শিশুসহ ৯৩৫ জন নিহত হয়েছেন।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীরের বরাত দিয়ে সোমবার (৩০ জুন) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনা এ তথ্য জানায়।

আসগর জাহাঙ্গীর বলেন, দখলদার ইহুদিবাদীদের আগ্রাসনে ১২ দিনের ৯৩৫ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু এবং ১০২ জন নারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন গর্ভবতী ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এই আক্রমণাত্মক ও অন্যায্য যুদ্ধে, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, সাহসী ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) কমান্ডার এবং উল্লেখযোগ্য পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের এই মুখপাত্র বলেন, শত্রুরা সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদের হত্যা করে দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। ভয় ছড়িয়ে দিতে এবং চাপ প্রয়োগ করতে চেয়েছিল। তবে, ইসলামী বিপ্লবের নেতা এবং এই শহীদদের যোগ্য উত্তরসূরিদের বিচক্ষণ নির্দেশনায়, দ্রুত এবং শক্তিশালী প্রতিশোধ কার্যকর করা হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই শত্রুর সমস্ত পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছিল।এর আগে, গত ২৪ জুন ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, সংঘাতে মোট নিহত হয়েছেন ৬১০ জন।

উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।

হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

sixteen − eleven =

ট্যাগস :

ইসরায়েলের হামলায় নিহতের নতুন সংখ্যা জানাল ইরান

আপডেট সময় : ০১:০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১৩ দিনের সংঘাতে নিহতের সংখ্যা সংশোধন করেছে ইরান। নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সংঘাতে ইরানে ৩৮ শিশুসহ ৯৩৫ জন নিহত হয়েছেন।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীরের বরাত দিয়ে সোমবার (৩০ জুন) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইরনা এ তথ্য জানায়।

আসগর জাহাঙ্গীর বলেন, দখলদার ইহুদিবাদীদের আগ্রাসনে ১২ দিনের ৯৩৫ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু এবং ১০২ জন নারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন গর্ভবতী ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এই আক্রমণাত্মক ও অন্যায্য যুদ্ধে, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, সাহসী ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) কমান্ডার এবং উল্লেখযোগ্য পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের এই মুখপাত্র বলেন, শত্রুরা সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদের হত্যা করে দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। ভয় ছড়িয়ে দিতে এবং চাপ প্রয়োগ করতে চেয়েছিল। তবে, ইসলামী বিপ্লবের নেতা এবং এই শহীদদের যোগ্য উত্তরসূরিদের বিচক্ষণ নির্দেশনায়, দ্রুত এবং শক্তিশালী প্রতিশোধ কার্যকর করা হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই শত্রুর সমস্ত পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছিল।এর আগে, গত ২৪ জুন ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, সংঘাতে মোট নিহত হয়েছেন ৬১০ জন।

উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।

হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।