ময়মনসিংহ নগরীতে ফেসবুকে ‘টু-লেট’ বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক কলেজছাত্র। এ ঘটনায় দুই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান ওরফে নাঈম (২৩) ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে গুলকিবাড়ী এলাকার একটি ফ্ল্যাটে বাসা দেখতে যান। সেখানে চার তরুণী ও চার তরুণ তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে তার কাছ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ ও ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দুই তরুণী সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) এবং ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর ফেসবুকে দুই তরুণীর বিলাসী জীবনযাপনের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পারিবারিকভাবে সচ্ছল না হয়েও এ বিলাসী জীবনের উৎস নিয়ে চলছে তদন্ত। পুলিশ বলছে, চক্রটির আরও সদস্যকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

ঘটনার শিকার নাজমুল হাসান নিজেও বিতর্কিত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। নকল প্রশ্নপত্র বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করাই ছিল তার কাজ।

কোতোয়ালি মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুব আলম ফকির জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুই তরুণী পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে এবং পুলিশ তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে।

তিনি বলেন, বাদী কলেজছাত্রের প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িত থাকার বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।

থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি নগরীতে আরও একটি প্রতারক চক্র ধরা পড়ে। নারীর ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করত তারা। একই ধরনের কর্মকাণ্ডে এই নতুন চক্রটিও জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ মনে করছে, রিমান্ডে এনে প্রতারণার পুরো চক্রের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।